মুমিন জীবনের সর্বাবস্থায় সুখানুভবের রহস্য

মানুষ চিরকালই সুখ সন্ধানী। বড় কোনো সফলতা, সমাজের স্বীকৃতি কিংবা দৃষ্টিনন্দন ভবিষ্যৎ; এসবের মাঝেই সে সুখের ঠিকানা আঁকে। কিন্তু সময়ের প্রবাহে মানুষ ধীরে ধীরে উপলব্ধি করে, বড় কিছু সবসময় আসে না। দিনের শেষে থেকে যায় কিছু ক্ষুদ্র অর্জন, কিছু ছোট ভালো লাগা, আর মাঝে মাঝে শুধুই নিঃসঙ্গতা।
যারা চায় সাময়িক সুখ, তারা অপেক্ষা করে বড় কোনো অর্জনের। কোনো লক্ষ্য পূরণ হলে তাদের মুখে হাসি ফোটে, না হলে ভেঙে পড়ে। জীবনের মানে তাদের কাছে শুধুই সফলতার পাল্লায় ঝুলে থাকে।
আর যারা চায় জীবনের অধিকাংশ সময়ে আনন্দে থাকতে, তারা বুঝে যে, ক্ষুদ্র কাজেও প্রশান্তি পাওয়া যায়।
কিন্তু যারা চায় সারাজীবন সুখে থাকতে; তারা নেয় এক ভিন্ন পথ।
তারা প্রতিটি ভোরে চোখ মেলে ভাবে; আল্লাহ আমাকে মুসলিম বানিয়েছেন।
তারা জানে; ইসলাম কোনো ক্ষণস্থায়ী পরিচয় নয়। এটি চিরন্তন আশ্রয়, যা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। তারা দিনের শুরু করে এই উপলব্ধি নিয়ে যে, আজও আমি একজন তাওহীদবান মানুষ।
এমনকি যদি দিনটি কোনো বড় অর্জন ছাড়াও কাটে, যদি কোনো স্বপ্ন পূরণ না-ও হয়, তবুও একটি কারণ থেকে যায় আনন্দের যে, আজও আমি কুফর ও শিরক থেকে মুক্ত, আজও আমি জান্নাতের আশায় বাঁচছি।
এই পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ আল্লাহকে অস্বীকার করে। তারা ঈমান ছাড়াই জীবন কাটায়। তারা জানে না তাদের সামনে কী ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
আর আপনি?
আপনি তো সেই সৌভাগ্যবানদের একজন, যাকে আল্লাহ দিয়েছেন সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত ইসলাম। আপনি একজন মুসলিম, এক আল্লাহর তাওহিদের ধারক মুমিন।
তাহলে আপনি কেন ভাববেন; আপনি কিছুই পাননি?
আপনি কেন বলবেন; ‘আমার জীবনে আনন্দের কিছু নেই’?
আপনার জীবনে যে ঈমান আছে; এই তো আসল ধন! ঈমান তো এমন ধন, যার কোনো মানদণ্ডে ওজন করা যায় না। যার মূল্য শুধু জান্নাতের চাবিকাঠিতে প্রকাশ পায়।
মহান আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারিমে বলেন,
‘বলুন: আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ার কারণেই তারা যেন আনন্দ করে—এটাই তাদের সমস্ত কিছু থেকে উত্তম।’
(সূরা ইউনুস, আয়াত ৫৮)
সুতরাং সুখ বড় অর্জনে নয়।
সুখ সত্য উপলব্ধিতে।
আর সেই সত্য হলো; আপনি মুসলিম।
আপনি একজন তাওহীদের অনুসারী। এই পরিচয়ই আপনাকে নিয়ে যাবে জান্নাতের চিরসুখের ঠিকানায়।
Post a Comment